বিষয়াবলী

প্রতিটি লেনদেন ব্যবসায়ের আর্থিক অবস্থার উপর প্রভাব ফেলে। দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুসারে এ প্রভাব দুটি পক্ষের উপর (ডেবিট ক্রেডিট) সমভাবে পরিলক্ষিত হয়। লেনদেনের এই প্রভাব আর্থিক অবস্থার উপর নির্দিষ্টভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয় হিসাব সমীকরণ। এক কথায়, হিসাব সমীকরণের দ্বারা একটি লেনদেনের প্রভাব সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হিসাব ব্যবস্থার মধ্যে চিহ্নিত করা যায়।

 

হিসাব সমীকরণ :

 

A = L + OE

এখানে,
A = Assets (সম্পত্তি)
L = Liabilities (দায়)
OE = Owner’s Equity (মালিকানা স্বত্ত্ব)

 

সম্পত্তি : সম্পত্তি হলো প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন এবং কোন বস্তু যা প্রতিষ্ঠানকে ভবিষ্যত সুবিধা প্রদান করবে। সম্পত্তি সাধারণত মূলধনজাতীয় ব্যয় থেকে সৃষ্টি হয় এবং ভবিষ্যত সুবিধা প্রদান করে। যেমন- আসবাবপত্র, দালানকোঠা, বকেয়া আয়, অগ্রিম ব্যয়, সুনাম, প্যাটেন্ট, ট্রেডমার্ক, নগদ জমা, ব্যাংকে জমা, লাভ-লোকসান আবণ্টন হিসাবের ডেবিট উদ্বৃত্ত, ইত্যাদি।

 

দায় : সম্পত্তির বিপরীতে মালিক ব্যতীত তৃতীয় পক্ষের দাবীকে দায় বলে। যেমন- বিবিধ পাওনাদার, প্রদেয় বিল, বকেয়া ব্যয়, অনুপার্জিত আয়, ঋণপত্র, বন্ধকী ঋণ, ইত্যাদি।

 

মালিকানা স্বত্ত্ব : সম্পত্তির বিপরীতে মালিকের দাবীকে মালিকানা স্বত্ত্ব বা মূলধন বলে। যেমন- শেয়ার মূলধন, শেয়ার অধিহার, জমাকৃত মুনাফা, সাধারণ সঞ্চিতি, বিশেষ সঞ্চিতি, ইত্যাদি।

 

হিসাব লেনদেনের প্রকারভেদ : প্রত্যেকটি লেনদেন এই হিসাব সমীকরণের উপর প্রভাব ফেলে। লেনদেনের এই প্রভাবকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-

 

১. পরিমাণগত বা নীট পরিবর্তন
২. গুণগত বা কাঠামোগত পরিবর্তন

 

১. পরিমাণগত বা নীট পরিবর্তন : যদি কোনো লেনদেনের দ্বারা হিসাব সমীকরণের দুই পাশই সমপরিমাণ অংক দ্বারা হ্রাস বা বৃদ্ধি হয়, তাহলে তা পরিমাণগত বা নীট পরিবর্তন। যেমন- নগদে বেতন প্রদান করা হলো ২,০০০ টাকা। এর ফলে সম্পত্তি (নগদ) ও মালিকানা স্বত্ত্ব (বেতন) উভয়ই ২,০০০ টাকা হ্রাস পায়।

 

২. গুণগত বা কাঠামোগত পরিবর্তন : যদি কোনো লেনদেনের দ্বারা হিসাব সমীকরণের শুধুমাত্র একটি পাশ পরিপূরকভাবে হ্রাস ও বৃদ্ধি পায়, তাহলে তা গুণগত বা কাঠামোগত পরিবর্তন। যেমন- নগদে আসবাবপত্র ক্রয় করা হলো ৫,০০০ টাকা। এর ফলে সম্পত্তি (নগদ) একবার হ্রাস পায়, এবং আরেকবার সম্পত্তি (আসবাবপত্র) বৃদ্ধি পায়।