বঙ্গিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
 
প্রথম প্রকাশ- বঙ্গদর্শন, ফাল্গুন সংখ্যা, ১২৮৮ বঙ্গাব্দ
বঙ্কিমের বিখ্যাত রম্যব্যঙ্গ সংকলন ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর সর্বশেষ রচনার নির্বাচিত অংশ।
মূলপাঠে (বঙ্কিমের দেয়া নাম) রচনাটির নাম ছিলো ‘কমলাকান্তের জোবানবন্দী’। সংকলিত অংশের নামের বানানে একটু পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে ‘কমলাকান্তের জবানবন্দী’।
এটি একটি নকশা জাতীয় রচনা।
 
চরিত্র
কমলাকান্ত- প্রধান চরিত্র। আফিংখোর। ব্রাহ্মণ। পুরো নাম- শ্রীকমলাকান্ত চক্রবর্তী। বয়স-৫১ বছর ২ মাস ১৩ দিন। বাসা নেই, কোন পেশাও নেই।
 
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও উদ্ধৃতি
এজলাসে, প্রথামত মাচানের উপর হাকিম বিরাজ করিতেছেন। হাকিমটি একজন দেশী ধর্মাবতার- পদে গৌরবে ডেপুটি।
কমলাকান্ত আসামী নহে- সাক্ষী।
মোকদ্দমা গরুচুরি।
ফরিয়াদী প্রসন্ন গোয়ালিনী।
 
‘বাবা, কার ক্ষেতে ধান খেয়েছি যে, আমাকের এর ভিতর পুরিলে?’- কমলাকান্ত
‘পরমেশ্বর ঠিক প্রত্যক্ষের বিষয় নয়।’- কমলাকান্ত
ফরিয়াদীর উকিল চটিলেন- তাঁহার মূল্যবান সময়, যাহা মিনিটে মিনিটে টাকা প্রসব করে, তাহা এই দরিদ্র সাক্ষী নষ্ট করিতেছে।
‘ধর্মাবতার! সাক্ষী বড় সেরকশ।’- মুহুরি, হাকিমকে
‘ওঁ মধু মধু মধু।’- কমলাকান্ত, প্রতিজ্ঞা শুনে
‘উকিলবাবু অধিকারী- আমি যাত্রার ছেলে, যা বলাইবেন, কেবল তাহাই বলিব; যা না বলাইবেন; ত বলিব না।’- কমলাকান্ত
‘ভাতের সঙ্গে ডাল মাখিয়া, দক্ষিণ হস্তে গ্রাস তুলিয়া, মুখে পুরিয়া গলাধঃকরণ করি।’- কমলাকান্ত
‘আমি এ সাক্ষী চাই না। আমি ইহার জবানবন্দী করাইতে পারিব না।’- উকিলবাবু
 
শব্দার্থ ও টীকা
এজলাস- বিচারকক্ষ
ডিপুটি- ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট
কাটারা- কাঠগড়া
ব্রাহ্মসমাজ- রাজা রামমোহন রায় প্রবর্তিত এবং মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ প্রচারিত একেশ্বরবাদী ধর্মসম্প্রদায়।
সেরকশ- বেয়াড়া, উদ্ধত, একরোখা, একগুঁয়ে
ওঁ- ঈশ্বরবাচক ধ্বনি
মধু- এখানে সুরা (অথবা ব্যঙ্গে টাকাকড়ি) বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে।
অধিকারী- যাত্রাদলের মালিক বা পরিচালক
বর্ণ- হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪ বর্ণ; ব্রাহ্মণ, কায়স্থ, বৈশ্য, শূদ্র। অন্য অর্থে, বর্ণ অর্থ রং।
যজ্ঞোপবীত- যজ্ঞসূত্র, উপবীত, পৈতা
কুঠারি- ছোট কামরা, খোপ
শরণাগত- আশ্রয়প্রার্থী বা আশ্রয়প্রাপ্ত
Oath- হলফ
Objection- আপত্তি
Obstructive- বাধা সৃষ্টিকারী
Simple Affirmation- সহজ হলফনামা
Theological Lecture- ধর্মতত্ত্বীয় বক্তৃতা
Wit- বাগবৈদগ্ধ
 
লেখক পরিচিতি
জন্ম : ১৮৩৮, পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা জেলার কাঁঠালপাড়াগ্রামে
মৃত্যু : ১৮৯৪
বাংলা উপন্যাসের জনক (১ম বাংলা উপন্যাস- দুর্গেশনন্দিনী; ১৮৬৫)
উপাধি- ‘সাহিত্য সম্রাট’
যুগন্ধর সাহিত্য স্রষ্টা
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্নাতকদের একজন (প্রথম বছরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বঙ্কিমচন্দ্র সহ মাত্র ২ জন স্নাতক হন; পরীক্ষা দিয়েছিলেন ১৮ জন।)
পেশায় তিনি ছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট
‘বঙ্গদর্শন’ সাহিত্য পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক
গ্রন্থ-
উপন্যাস- দুর্গেশনন্দিনী, কপালকুণ্ডলা, বিষবৃক্ষ, কৃষ্ণকান্তের উইল, রাজসিংহ
প্রবন্ধ- লোকরহস্য, কমলাকান্তের দপ্তর, বিবিধ প্রবন্ধ, সাম্য
 
ভাষা অনুশীলন/ব্যাকরণ অংশ
লিঙ্ক- বাক্য রূপান্তর (সরল থেকে জটিল), পারিভাষিক শব্দ, বানান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন

  • ‘ধর্মাবতার! সাক্ষী বড় সেরকশ’- সংলাপটি কার? (ঘ-২০১০-১১)
  • ‘আমি এ সাক্ষী চাই না।’- সরল বাক্যটির জটিল রূপ (ক-২০০৯-১০)
  • ‘ভাতের সঙ্গে ডাল মাখিয়া, দক্ষিণ-হস্তে তুলিয়া, মুখে পুরিয়া গলাধঃকরণ করি’ উক্তিটি কার? (গ-২০০২-০১)