কাজী নজরুল ইসলাম
 
কাব্যগ্রন্থ- সন্ধ্যা
ছন্দ- মাত্রাবৃত্ত; ৬ মাত্রা, শেষ অপূর্ণ পর্ব ২ মাত্রার (নজরুলের প্রিয় ছন্দ ৬ মাত্রার মাত্রাবৃত্ত,তিনি বহু কবিতা এই ছন্দে লিখেছেন।)
এই কবিতায় কবি ৩ ধরনের মানুষের জয়গান গেয়েছেন/ উল্লেখ করেছেন/ প্রশংসা করেছেন- (ক্রমানুসারে)
১. চাষী ও শ্রমিক, যারা কঠিন শ্রমে পৃথিবীকে ভরিয়ে দেয় ফল ও ফসলে, যারা মৃত্যু সমাকীর্ণ অরণ্যময় পৃথিবীকে করে তুলেছে মনোরম ও সুন্দর
২. অভিযাত্রী, যারা যুগে যুগে দুঃসাহসিক সব অভিযানের মাধ্যমে মানুষের সামর্থ্যের সীমারেখাকে বহু দূরে নিয়ে গেছে
৩. বিপ্লবী, যারা মানব-কল্যাণে আত্মাহুতি দিয়েছে দেশে দেশে কালে কালে (কূপমণ্ডুক, অসংযমী)
 
উল্লেখ আছে- ব্যাঘ্র(বাঘ), ময়ূর, সিংহ, ফণী(সাপ), হিমালয়, চন্দ্র, মঙ্গল, স্বর্গ, বেদে, বেদুঈন
 
বর্বর বলি যাহাদের গালি পাড়িল ক্ষুদ্রমনা,
কূপ-মণ্ডুক ‘অসংযমী’র আখ্যা দিয়াছে যারে,
তারি তরে ভাই গান রচে যাই, বন্দনা করি তারে।
 
শব্দার্থ ও টীকা
ফরমান- বাণী, সংবাদ, খবর
কিণাঙ্ক- কড়া, ঘর্ষণের ফলে হাত বা পায়ের শক্ত হওয়া চামড়া বা মাংস
শ্রম-কিণাঙ্ক-কঠিন- পরিশ্রমে কড়া-পড়া ও দৃঢ়
বন্য-শ্বাপদ-সঙ্কুল- হিংস্র মাংসাশী জীবজন্তুতে পরিপূর্ণ
জরা-মৃত্যু-ভীষণা ধরা- বার্ধক্য ও মৃত্যু সমাকীর্ণ ভয়ংকর পৃথিবী
বর্বর- নির্ভয়ে, নির্ভীকচিত্তে
বিবর- গর্ত, গহ্বর
যাযাবর- কোনো নির্দিষ্ট বাসস্থান নেই এমন ভ্রাম্যমাণ জাতিবিশেষ
অমরাবতী- স্বর্গ
উদ্ধত-শির- দুর্বিনীত, যারা সহজে মাথা নোয়ায় না
ভীম রণভূমে- ভয়ংকর যুদ্ধক্ষেত্রে
বেদে- ভারতবর্ষ অঞ্চলের তথা আমাদের উপমহাদেশের যাযাবর জাতিবিশেষ
বেদুঈন- আরব দেশের যাযাবর জাতিবিশেষ
গরল-পিয়ালা- বিষপাত্র
গিরি-নিঃস্রাব- পর্বত-নিঃসৃত ঝর্ণা বা নদী
কূপমণ্ডুক- কূয়োর ব্যাঙ, বাইরের জগৎ সম্পর্কে জ্ঞান নেই এমন ব্যক্তি, অল্পজ্ঞ
অসংযমী- উচ্ছৃঙ্খল
 
লেখক পরিচিতি
জন্ম : ১৮৯৯ সালের ২৫ মে, ১৩০৬ সনের ১১ জ্যৈষ্ঠ, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে
মৃত্যু : ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট, ঢাকায়
যুগের যথার্থ চারণকবি
ছোটবেলায় লেটো গানের দলে যোগ দিয়েছিলেন।
পরে বর্ধমান ও ময়মনসিংহের ত্রিশাল থানার দরিরামপুর হাইস্কুলে লেখাপড়া করেন।
১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে বাঙালি পল্টনে যোগ দিয়ে করাচী যান।
লেখায় সামাজিক অবিচার ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন বলে তাকে ‘বিদ্রোহী কবি’ বলা হয়।
মাত্র ৪৩ বছর বয়সে দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে বাকশক্তি হারান।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয় এবং বাংলাদেশে এনে চিকিৎসা করা হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় কবি।
গ্রন্থ-
কাব্যগ্রন্থ- অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, ছায়ানট, প্রলয়-শিখা, চক্রবাক, সিন্ধু-হিন্দোল
গল্পগ্রন্থ- ব্যথার দান, রিক্তের বেদন, শিউলিমালা
উপন্যাস- মৃত্যু-ক্ষুধা
প্রবন্ধগ্রন্থ- যুগ-বাণী, দুর্দিনের যাত্রী, রুদ্র-মঙ্গল, রাজবন্দীর জবানবন্দী
 
ভাষা অনুশীলন/ব্যাকরণ অংশ
লিঙ্ক- বানান, বাগধারা, সমাস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন

  • ‘জীবন-বন্দনা’ কবিতা শেষ বন্দিত মানুষ (ঘ- ২০০৬-০৭)
  • ‘বন্য-শ্বাপদ-সঙ্কুল জ্বরা-মৃত্যু-ভীষণা ধরা’- এ চরণে পৃথিবীর রূপ বোঝাতে কটি বিশেষণ ব্যবহৃত হয়েছে? (ঘ-২০০৪-০৫)
  • কিণাঙ্ক’ শব্দের অর্থ কী? (ক-২০০৬-০৭)
  • হিমালয় পর্বতের প্রসঙ্গ আছে যে কবিতায়- (ক-২০০৬-০৭)
  • কাজী নজরুল ইসলামের ‘জীবন বন্দনা’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে? (গ-২০০৯-১০)
  • কোন সালে কবি কাজী নজরুল ইসলামকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়া হয়? (গ-২০০৮-০৯)
  • ২০০৭ সনে কাজী নজরুল ইসলামের কততম জন্মদিন পালিত হয়? (গ-২০০৭-০৮)
  • কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কোন নাটকটি কবি নজরুলকে উৎসর্গ করেছিলেন? (গ-২০০৬-০৭)
  • কাজী নজরুল ইসলামের ‘জীবন বন্দনা’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে? (গ-২০০২-০৩)
  • ‘জীবন বন্দনা’ কবিতাটি নজরুল ইসলামের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে? (গ-২০০১-০২)