একাধিক পদ বা উপবাক্যকে একটি শব্দে প্রকাশ করা হলে, তাকে বাক্য সংকোচন, বাক্য সংক্ষেপণ বা এক কথায় প্রকাশ বলে ।

 

অর্থাৎ একটিমাত্র শব্দ দিয়ে যখন একাধিক পদ বা একটি বাক্যাংশের (উপবাক্য) অর্থ প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে বাক্য সংকোচন বলে ।

 

যেমন- হীরক দেশের রাজা- হীরকরাজ

এখানে হীরকরাজ- শব্দের মাধ্যমে হীরক দেশের রাজা- এই তিনটি পদের অর্থই সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে । এই তিনটি পদ একত্রে একটি বাক্যাংশ বা উপবাক্যও বটে । অর্থাৎ, হীরক দেশের রাজা- তিনটি পদ বা বাক্যাংশটির বাক্য সংকোচন হল- হীরকরাজ ।

 

কিছু গুরুত্বপূর্ণ বাক্য সংকোচন/এক কথায় প্রকাশ


 

অকালে পেকেছে যে- অকালপক্ক্ব

অক্ষির সম্মুখে বর্তমান- প্রত্যক্ষ

অভিজ্ঞতার অভাব আছে যার- অনভিজ্ঞ

অহংকার নেই যার- নিরহংকার

অশ্বের ডাক- হ্রেষা

অতি কর্মনিপুণ ব্যক্তি- দক্ষ

অনুসন্ধান করবার ইচ্ছা- অনুসন্ধিৎসা

অনুসন্ধান করতে ইচ্ছুক যে- অনুসন্ধিৎসু

অপকার করবার ইচ্ছা- অপচিকীর্ষা

অগ্রপশ্চাৎ বিবেচনা না করে কাজ করে যে- অবিমৃষ্যকারী

অতি শীতও নয়, অতি উষ্ণও নয়- নাতিশীতোষ্ণ

অবশ্য হবে/ঘটবে যা- অবশ্যম্ভাবী

অতি দীর্ঘ নয় যা- নাতিদীর্ঘ

অতিক্রম করা যায় না যা- অনতিক্রমনীয়/অনতিক্রম্য

যা সহজে অতিক্রম করা যায় না- দুরতিক্রমনীয়/দুরতিক্রম্য

অগ্রে জন্মেছে যে- অগ্রজ

অনুতে/পশ্চাতে/পরে জন্মেছে যে- অনুজ

অরিকে দমন করে যে- অরিন্দম

অন্য উপায় নেই যার- অনন্যোপায়

অনেকের মাঝে একজন- অন্যতম

অন্য গাছের ওপর জন্মে যে গাছ- পরগাছা

 

আচারে নিষ্ঠা আছে যার- আচারনিষ্ঠ

আপনাকে কেন্দ্র করে চিন্তা যার- আত্মকেন্দ্রীক

আকাশে চরে যে- খেচর

আকাশে গমন করে যে- বিহগ, বিহঙ্গ

আট প্রহর যা পরা যায়- আটপৌরে

আপনার রং লুকায় যে/যার প্রকৃত বর্ণ ধরা যায় না- বর্ণচোরা

আয় অনুসারে ব্যয় করে যে- মিতব্যয়ী

আপনাকে পণ্ডিত মনে করে যে- পণ্ডিতম্মন্য

আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত- আদ্যন্ত

 

ইতিহাস রচনা করেন যিনি- ঐতিহাসিক

ইতিহাস বিষয়ে অভিঞ্জ যিনি- ইতিহাসবেত্তা

ইন্দ্রকে জয় করেছে যে- ইন্দ্রজিৎ

ইন্দ্রিয়কে জয় করেছে যে- জিতেন্দ্রিয়ি

 

ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস আছে যার- আস্তিক

ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই যার- নাস্তিক

ঈষৎ আমিষ/আঁষ গন্ধ যার- আঁষটে

 

উপকার করবার ইচ্ছা- উপচিকীর্ষা

উপকারীর উপকার স্বীকার করে যে- কৃতজ্ঞ

উপকারীর উপকার স্বীকার করে না যে- অকৃতজ্ঞ

উপকারীর অপকার করে যে- কৃতঘ্ন

 

একই সময়ে বর্তমান- সমসাময়িক

একই মায়ের সন্তান- সহোদর

এক থেকে আরম্ভ করে- একাদিক্রমে

একই গুরুর শিষ্য- সতীর্থ

 

কথায় বর্ণনা যায় না যা- অনির্বচনীয়

কোনভাবেই নিবারণ করা যায় না যা- অনিবার্য

সহজে নিবারণ করা যায় না যা/কষ্টে নিবারণ করা যায় যা- দুর্নিবার

সহজে লাভ করা যায় না যা/কষ্টে লাভ করা যায় যা- দুর্লভ

কোন কিছুতেই ভয় নেই যার- নির্ভীক, অকুতোভয়

ক্ষমার যোগ্য- ক্ষমার্হ

কউ জানতে না পারে এমনভাবে- অজ্ঞাতসারে

 

গোপন করার ইচ্ছা- জুগুপ্সা

 

চক্ষুর সম্মুখে সংঘটিত- চাক্ষুষ

চৈত্র মাসের ফসল- চৈতালি

 

জীবিত থেকেও যে মৃত- জীবন্মৃত

জানার ইচ্ছা- জিজ্ঞাসা

জানতে ইচ্ছুক- জিজ্ঞাসু

জ্বল জ্বল করছে যা- জাজ্বল্যমান

জয় করার ইচ্ছা- জিগীষা

জয় করতে ইচ্ছুক- জিগীষু

জানু পর্যন্ত লম্বিত- আজানুলম্বিত

 

তল স্পর্শ করা যায় না যার- অতলস্পর্শী

তীর ছোঁড়ে যে- তীরন্দাজ

 

দিনে যে একবার আহার করে- একাহারী

দীপ্তি পাচ্ছে যা- দীপ্যমান

দু’বার জন্মে যে- দ্বিজ

 

নষ্ট হওয়াই স্বভাব যার- নশ্বর

নদী মেখলা যে দেশের- নদীমেখলা

নৌকা দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করে যে- নাবিক

নিজেকে যে বড়ো মনে করে- হামবড়া

নূপুরের ধ্বনি- নিক্কণ

 

পা থেকে মাথা পর্যন্ত- আপাদমস্তক

প্রিয় বাক্য বলে যে নারী- প্রিয়ংবদা

পূর্বজন্ম স্মরণ করে যে- জাতিস্মর

পান করার যোগ্য- পেয়

পান করার ইচ্ছা- পিপাসা

 

ফল পাকলে যে গাছ মরে যায়- ওষধি

 

বিদেশে থাকে যে- প্রবাসী

বিশ্বজনের হিতকর- বিশ্বজনীন

ব্যাকরণ জানেন যিনি- বৈয়াকরণ

বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে গবেষণায় রত যিনি- বৈজ্ঞানিক

বেদ-বেদান্ত জানেন যিনি- বৈদান্তিক

বয়সে সবচেয়ে বড়ো যে- জ্যেষ্ঠ

বয়সে সবচেয়ে ছোটো যে- কনিষ্ঠ

 

ভোজন করার ইচ্ছা- ‍বুভুক্ষা

 

মৃতের মত অবস্থা যার- মুমূর্ষু

মুষ্টি দিয়ে যা পরিমাপ করা যায়- মুষ্টিমেয়

মৃত্তিকা দ্বারা নির্মিত- মৃন্ময়

মর্মকে পীড়া দেয় যা- মর্মন্তুদ

মাটি ভেদ করে ওঠে যা- উদ্ভিদ

মৃত গবাদি পশু ফেলা হয় যেখানে- ভাগাড়

মন হরণ করে যা- মনোহর

মন হরণ করে যে নারী- মনোহারিণী

 

যা দমন করা যায় না- অদম্য

যা দমন করা কষ্টকর- দুর্দমনীয়

যা নিবারণ করা কষ্টকর- দুর্নিবার

যা পূর্বে ছিল এখন নেই- ভূতপূর্ব

যা বালকের মধ্যেই সুলভ- বালকসুলভ

যা বিনা যত্নে লাভ করা গিয়েছে- অযত্নলব্ধ

যা ঘুমিয়ে আছে- সুপ্ত

যা বার বার দুলছে- দোদুল্যমান

যা দীপ্তি পাচ্ছে- দেদীপ্যমান

যা সাধারণের মধ্যে দেখা যায় না- অনন্যসাধারণ

যা পূর্বে দেখা যায় নি- অদৃষ্টপূর্ব

যা কষ্টে জয় করা যায়- দুর্জয়

যা কষ্টে লাভ করা যায়- দুর্লভ

যা অধ্যয়ন করা হয়েছে- অধীত

যা অনেক কষ্টে অধ্যয়ন করা যায়- দুরধ্যয়

যা জলে চরে- জলচর

যা স্থলে চরে- স্থলচর

যা জলে ও স্থলে চরে- উভচর

যা বলা হয় নি- অনুক্ত

যা কখনো নষ্ট হয় না- অবিনশ্বর

যা মর্ম স্পর্শ করে- মর্মস্পর্শী

যা বলার যোগ্য নয়- অকথ্য

যার বংশ পরিচয় এবং স্বভাব কেউই জানে না- অজ্ঞাতকুলশীল

যা চিন্তা করা যায় না- অচিন্তনীয়, অচিন্ত্য

যা কোথাও উঁচু কোথাও নিচু- বন্ধুর

যা সম্পন্ন করতে বহু ব্যয় হয়- ব্যয়বহুল

যা খুব শীতল বা উষ্ণ নয়- নাতিশীতোষ্ণ

যার বিশেষ খ্যাতি আছে- বিখ্যাত

যা আঘাত পায় নি- অনাহত

যা উদিত হচ্ছে- উদীয়মান

যা ক্রমশ বর্ধিত হচ্ছে- বর্ধিষ্ণু

যা পূর্বে শোনা যায় নি- অশ্রুতপূর্ব

যা সহজে ভাঙ্গে- ভঙ্গুর

যা সহজে জীর্ণ হয়- সুপাচ্য

যা খাওয়ার যোগ্য- খাদ্য

যা চিবিয়ে/চর্বণ করে খেতে হয়- চর্ব্য

যা চুষে খেতে হয়- চোষ্য

যা লেহন করে খেতে হয়/লেহন করার যোগ্য- লেহ্য

যা পান করতে হয়/পান করার যোগ্য- পেয়

যা পানের অযোগ্য- অপেয়

যা বপন করা হয়েছে- উপ্ত

যা বলা হয়েছে- উক্ত

যার অন্য উপায় নেই- অনন্যোপায়

যার কোন উপায় নেই- নিরুপায়

যার উপস্থিত বুদ্ধি আছে- প্রত্যুৎপন্নমতি

যার সর্বস্ব হারিয়ে গেছে- সর্বহারা, হৃতসর্বস্ব

যার কোনো কিছু থেকেই ভয় নেই- অকুতোভয়

যার আকার কুৎসিত- কদাকার

যার কোন শত্রু নেই/জন্মেনি- অজাতশত্রু

যার দাড়ি/শ্মশ্রু জন্মে নি- অজাতশ্মশ্রু

যার কিছু নেই- অকিঞ্চন

যে কোন বিষয়ে স্পৃহা হারিয়েছে- বীতস্পৃহ

যে শুনেই মনে রাখতে পারে- শ্রুতিধর

যে বাস্তু থেকে উৎখাত হয়েছে- উদ্বাস্তু

যে নারী নিজে বর বরণ করে নেয়- স্বয়ংবরা

যে গাছে ফল ধরে, কিন্তু ফুল ধরে না- বনস্পতি

যে রোগ নির্ণয় করতে হাতড়ে মরে- হাতুড়ে

যে নারীর সন্তান বাঁচে না/যে নারী মৃত সন্তান প্রসব করে- মৃতবৎসা

যে গাছ অন্য কোন কাজে লাগে না- আগাছা

যে গাছ অন্য গাছকে আশ্রয় করে বাঁচে- পরগাছা

যে পুরুষ বিয়ে করেছে- কৃতদার

যে মেয়ের বিয়ে হয়নি- অনূঢ়া

যে ক্রমাগত রোদন করছে- রোরুদ্যমান (স্ত্রীলিঙ্গ- রোরুদ্যমানা)

যে ভবিষ্যতের চিন্তা করে না বা দেখে না- অপরিণামদর্শী

যে ভবিষ্যৎ না ভেবেই কাজ করে/অগ্র পশ্চাত বিবেচনা না করে কাজ করে যে- অবিমৃশ্যকারী

যে বিষয়ে কোন বিতর্ক/বিসংবাদ নেই- অবিসংবাদী

যে বন হিংস্র জন্তুতে পরিপূর্ণ- শ্বাপদসংকুল

যিনি বক্তৃতা দানে পটু- বাগ্মী

যে সকল অত্যাচারই সয়ে যায়- সর্বংসহা

যে নারী বীর সন্তান প্রসব করে- বীরপ্রসূ

যে নারীর কোন সন্তান হয় না- বন্ধ্যা

যে নারী জীবনে একমাত্র সন্তান প্রসব করেছে- কাকবন্ধ্যা

যে নারীর স্বামী প্রবাসে আছে- প্রোষিতভর্তৃকা

যে স্বামীর স্ত্রী প্রবাসে আছে- প্রোষিতপত্নীক

যে পুরুষের চেহারা দেখতে সুন্দর- সুদর্শন (স্ত্রীলিঙ্গ- সুদর্শনা)

যে রব শুনে এসেছে- রবাহুত

যে লাফিয়ে চলে- প্লবগ

যে নারী কখনো সূর্য দেখেনি- অসূর্যম্পশ্যা

যে নারীর স্বামী মারা গেছে- বিধবা

যে নারীর সম্প্রতি বিয়ে হয়েছে- নবোঢ়া

 

লাভ করার ইচ্ছা- লিপ্সা

 

শুভ ক্ষণে জন্ম যার- ক্ষণজন্মা

শত্রুকে/অরিকে দমন করে যে- অরিন্দম

শত্রুকে বধ করে যে- শত্রুঘ্ন

 

সম্মুখে অগ্রসর হয়ে অভ্যর্থনা- প্রত্যুদ্গমন

সকলের জন্য প্রযোজ্য- সর্বজনীন

সকলের জন্য হিতকর- সার্বজনীন

স্ত্রীর বশীভূত হয় যে- স্ত্রৈণ

সেবা করার ইচ্ছা- শুশ্রুষা

 

হনন/হত্যা করার ইচ্ছা- জিঘাংসা

হরিণের চামড়া- অজিন

হাতির ডাক- বৃংহতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন
• ‘প্রতিধ্বনি ক্রমবিস্তার’-এর এক শব্দরূপ (ঘ-২০০০-০১)
• যার আকার কুৎসিত  (ঘ-২০০৩-০৪)
• শত্রুকে দমন করে যে, তাকে এক শব্দে বলা হয়-  (ঘ-২০০৩-০৪)
• ‘পরকে প্রতিপালন করে যে’- এক কথায় হবে (ঘ-২০০৬-০৭)
• ‘অতি কর্মনিপুণ ব্যক্তি’র বাক্য সংকোচণ  (ঘ-২০০৮-০৯)
• যে বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই’ কথাটিকে এক কথায় প্রকাশ করলে হবে (ঘ-২০০৯-১০)
• যে স্বামীর স্ত্রী প্রবাসে আছে তাকে কী বলে? (ঘ-২০০৯-১০)
• এক কথায় প্রকাশ কর- পান করার যোগ্য (ক-২০০৫-০৬)
• অনেক কষ্টে যা অধ্যয়ন করা যায়- এক কথায় কী হবে? (ক-২০০৬-০৭)
• এক কথায় প্রকাশ কর : যে কোন বিষয়ে স্পৃহা হারিয়েছে (ক-২০০৬-০৭)
• অনেক কষ্টে যা অধ্যয়ন করা যায়- এক কথায় কী হবে? (ক-২০০৭-০৮)
• ‘গম্ভীর ধ্বনি’- এর বাক্য সংকোচন? (গ-২০১০-১১)
• শত্রুকে দমন করে যে, তাকে এক কথায় বলা হয়? (গ-২০০৮-০৯)
• ‘দিন ও রাত্রির সন্ধিক্ষণ’- বাক্য সংকোচনে বলা যায়: (গ-২০০৫-০৬)
• ‘অনসূয়া’ শব্দটি কোন বাক্যের সংকুচিত রূপ? (গ-২০০২-০৩)
• ‘নির্মোক’ কোন শব্দগুচ্ছের সংকুচিত রূপ? (গ-২০০১-০২)