বিষয়াবলী

নৌবীমা
১৯০৬ সালের বৃটিশ নৌ আইন অনুযায়ী, ‘নৌবীমা চুক্তি হল এমন একটি চুক্তি যেখানে বীমাকারী বীমাগ্রহীতাকে সমুদ্রযাত্রা সংক্রামত্ম ক্ষয়-ক্ষতির বিরুদ্ধে নির্ধারিত পন্থায় ও নির্ধারিত সীমা পর্যমত্ম ক্ষতিপূরণ প্রদানের দায় গ্রহণ করে।’

 

নৌ বীমার বিবর্তনের ইতিহাস

  • নৌ বীমার উন্মেষ ঘটে খ্রিস্টপূর্ব ৯১৬ অব্দে, রোচ দ্বীপের অধিবাসীদের দ্বারা
  • (লন্ডন) নামে সমিতি গঠিত হয় ১৭৭১ সালে। পরে ১৮৭১ সালে এটি নামে কোম্পানি হিসেবে পুনর্গঠিত ও সংবিধিবদ্ধ হয়।

 

নৌ বীমাপত্রের প্রকারভেদ

 

যাত্রার বীমাপত্র

যে বীমাপত্রে নির্দিষ্ট যাত্রাপথের উলেস্নখ থাকে এবং উলেস্নখিত নির্দিষ্ট যাত্রাপথে চলার সময় জাহাজ বা জাহাজের পণ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা হলে বীমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ দেয়, তাকে যাত্রার বীমাপত্র বলে।

সময় বীমাপত্র

যে বীমাপত্রের মাধ্যমে কোন নির্দিষ্ট সময়ে জাহাজ, পণ্য বা মাশুলের জন্য নৌ বীমা করা হয় তাকে সময় বীমাপত্র বলে।

মিশ্র বীমাপত্র

যে বীমাপত্রে নির্দিষ্ট যাত্রাপথের উলেস্নখ থাকে এবং সাথে সাথে সময়েরও উলেস্নখ থাকে, তাকে মিশ্র বীমাপত্র বলে।

মূল্যায়িত বীমাপত্র

যে নৌ বীমাপত্রের প্রথমেই নৌ বীমাকারী, বীমাগ্রহীতার বিষয়বস্ত্তর মূল্য নির্ধারণ করে সেই পরিমাণ অর্থ বীমাপত্রে বীমাকৃত অঙ্ক হিসেবে উলেস্নখ থাকে, তাকে মূল্যায়িত বীমাপত্র বলে।

ভাসমান বীমাপত্র

একই মালিক বা প্রতিষ্ঠানের একাধিক জাহাজ নির্দিষ্ট সময়ের জন্য একই বীমাপত্রের আওতায় বীমা করা হলে তাকে ভাসমান বীমাপত্র বলা হয়।

যুগ্ম বীমাপত্র

যদি একই বীমাগ্রহীতা একই বিষয়বস্ত্তর জন্য দুটি নৌ বীমা কোম্পানির নিকট হতে বীমাপত্র ক্রয় করে তবে তাকে যুগ্ম বীমাপত্র বলে।

 

নৌ বিপদ সমূহ
১. প্রাকৃতিক বিপদ : সামুদ্রিক ঝড়, সমুদ্রে জাহাজ নিমজ্জিত হওয়া, ভাসমান বরফ খণ্ডে ধাক্কা লাগা, ইত্যাদি
২. অপ্রাকৃতিক বিপদ : জলদস্যু, শত্রম্ন, পণ্য নিক্ষেপ, আগুন, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি, বিস্ফোরণ, ইত্যাদি

 

নৌবীমাচুক্তির অত্যাবশ্যকীয় শর্তাবলী

১. ব্যক্ত/ প্রকাশিত শর্তাবলী :
ক. যাত্রার নিরাপদ সময়
খ. যাত্রার সুনির্দিষ্ট তারিখ
গ. রক্ষীবহর সঙ্গে রাখা
ঘ. বীমাকৃত সম্পদের নিরপেক্ষতা ঘোষণা

 

২.   অব্যক্ত/ অপ্রকাশিত শর্তাবলী :
ক. জাহাজের সমুদ্রে চলাচলযোগ্যতা
খ. যাত্রার বৈধতা
গ. নির্দিষ্ট সময়ে যাত্রা
ঘ. যাত্রাপথ পরিবর্তন না করা

 

 সামুদ্রিক ক্ষতির প্রকারভেদ

 

সামুদ্রিক ক্ষতির প্রকারভেদ

 

  • সাধারণ আংশিক ক্ষতি : কোন বিপদে পণ্য, মাশুল ও জাহাজের মালিক প্রভৃতি পর স্বার্থ রক্ষার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে যে ক্ষতি সংঘটন করা হয়, তাকে সাধারণ আংশিক ক্ষতি বলে।
  • ক্ষতি : কোন বিপদ থেকে জাহাজকে রক্ষা করার জন্য কিছু পণ্য অথবা জাহাজের অংশবিশেষ সমুদ্রে নিক্ষেপ করে জাহাজকে হালকা করলে তাকে ক্ষতি বলে।
  • গচ্ছা : কোন বিপদ থেকে জাহাজকে রক্ষা করার জন্য কিছু পণ্য অন্য জাহাজে তুলে দিলে অথবা অন্য কোন জাহাজের সাহায্য নিয়ে গন্তব্য স্থলে পৌছালে সে বাবদ যে খরচ তাকে গচ্ছা বলে।
  • বিশেষ আংশিক ক্ষতি : সামুদ্রিক বিপদে/ কারণে অনিচ্ছাকৃতভাবে যে ক্ষতি সংঘটিত হয়, তাকে বিশেষ আংশিক ক্ষতি বলে। এটি সাধারণত আকস্মিকভাবে হয়ে থাকে।
  • বিশেষ চার্জেজ : বীমাকৃত বিষয়বস্ত্তর নিরাপত্তা বিধানে বা স্বার্থ রক্ষার্থে বীমাগ্রহীতার পক্ষে যে ব্যয় হয়, তাকে বিশেষ চার্জেজ বলে।
  • স্যালভেজ চার্জেজ : নৌ সমুদ্র পথে সম্পত্তি উদ্ধারকারী বা উদ্ধারকাজে সাহায্যকারীকে প্রদত্ত পুরস্কারকে বোঝায়।